1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর সভা বানচাল করতে ইট ছোঁড়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে

  • Update Time : শুক্রবার, ৮ জানুয়ারী, ২০২১
  • ১৭৩ Time View

বিশেষ সংবাদদাতা,কলকাতা : সেই নন্দীগ্রাম। যে নন্দীগ্রাম একদিন পশ্চিমবাংলার ক্ষমতা থেকে সিপিএমের পতন ঘটিয়েছিল তৃণমূলকে ক্ষমতায় আনতে, সেই নন্দীগ্রামে এবার সভা ছিল সেদিনের সেই বিরোধী দল তৃণমূলকে এবার বাংলার ক্ষমতা থেকে সরাতে। সেদিন তৃণমূলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যে শুভেন্দু অধিকারী, সেই শুভেন্দু অধিকারীই এবার নন্দীগ্রামে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেই তৃণমূলকে ক্ষমতা থেকে সরাতে। স্বভাবতই শুক্রবার নন্দীগ্রামের সভা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ছিল তুমুল আগ্রহ। মানুষের ভিড়ও হয়েছিল চোখে পড়ার মতো। সভায় হাজির ছিলেন নন্দীগ্রামের শহিদ পরিবারের সদস্যরা। হাজির ছিলেন নন্দীগ্রামের বহু সাধারণ মানুষ, শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী এবং বিজেপি কর্মী–সমর্থকরা।

কিন্তু এদিনের সভায় আচমকাই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আয়োজকদের তরফে অভিযোগের আঙুল তোলা হয় পশ্চিমবাংলা সরকার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে। ফলে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় সভায়। তারই মধ্যে দর্শকদের মধ্যে থেকে কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি হঠাৎ সভামঞ্চ লক্ষ্য করতে ইট ছুঁড়তে থাকে। ফলে উত্তেজনার পাশাপাশি সভাস্থলে উপস্থিত জনতার মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়ায়। মুহূর্তে মঞ্চে উঠে শুভেন্দু অধিকারী–সহ বিজেপি নেতারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। মঞ্চে উঠে আসেন বিজেপির নিরাপত্তা রক্ষীরাও। সুযোগ বুঝে যারা মঞ্চ লক্ষ্য করে ইট ছুঁড়েছিল, তারা পালিয়ে যায়। শুভেন্দু বলেন, ‘আপনারা কেউ ভয় পাবেন না। আমার ওপর আপনাদের ভরসা আছে তো? আমি বলছি, আপনাদের কোনও ভয় নেই। সভা শেষ হওয়ার পর আপনাদের কারও এখানে বেশি সময় থাকার দরকার নেই। তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে যাবেন। আমি চাই আজ সূর্য ডোবার আগেই আপনারা বাড়িতে ঢুকে যাবেন।’ এর পরই তিনি বলেন, ‘আমি সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়েছি। কিন্তু তখন তৃণমূলের কোনও সভায় সিপিএম এ ভাবে ঢিল ছুঁড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে সভা বন্ধ করে দিতে চায়নি। আজ তৃণমূলের নেতাদের নির্দেশে ওই দলের গুন্ডারা এই সভা বানচাল করে দিতে চেয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায়, আজ তৃণমূলের কতটা অধঃপতন ঘটেছে!’‌

সভা শেষে শুভেন্দু অধিকারী ঘোষণা করেন, যাঁরা এই সভায় যোগ দিয়েছেন, তাঁরা যতক্ষণ না বাড়ি পৌঁছচ্ছেন, ততক্ষণ তিনি মঞ্চে বসে থাকবেন। সকলে নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছনোর পরই তিনি বাড়ি ফিরে যাবেন। শুভেন্দু অধিকারী এবং অন্য বিজেপি নেতারা তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের বক্তব্য, ওই ঘটনা নাকি বিজেপিরই গোষ্ঠীকোন্দলের ফল। অন্যদিকে, সভায় ইট ছোঁড়া বা বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া নিয়ে পুলিশ বা প্রশাসনের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। এদিনের সভায় শুভেন্দু অধিকারী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায়, বিজেপির রাজ্য সম্পাদক দিলীপ ঘোষ প্রমুখ। সভায় কৈলাস বলেন, ‘নন্দীগ্রামে গুলিচালনার পর লালকৃষ্ণ আদবানির সঙ্গে এখানে প্রথম ঢুকেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই এনডিএ–র সঙ্গে মমতা বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। আর সেদিন যে পুলিশকর্মীরা গুলি চালিয়েছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার ক্ষমতায় আসার পর তাঁদের শাস্তি তো দেনইনি, বরং পুরস্কার দিয়েছেন।’

এর পর তিনি সেদিনের ‘কুখ্যাত’ পুলিশ অফিসারদের নাম ঘোষণা করে জানান তাঁদের কারা পদোন্নতি হয়ে কোন পদে গিয়েছেন! সেই সঙ্গে বাংলার বর্তমান রাজনীতিতে মুকুল রায় এবং শুভেন্দু অধিকারীকে ‘চাণক্য’ বলে উল্লেখ করেন। জানান, তাঁরাই বাংলার ক্ষমতা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেবেন। বক্তা ছিলেন মুকুল রায়ও। নন্দীগ্রাম থেকে এদিন তিনি সিঙ্গুরে টাটাকে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানান। বলেন, ‘সিঙ্গুর থেকে টাটারা চলে যাওয়ার জন্যই গত ১০ বছরে বাংলায় আর শিল্প আসেনি। আমি চাই সিঙ্গুরে ফিরে আসুক টাটারা। আর এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিন প্রধানমন্ত্রী। এটাই তাঁর কাছে আমার আর্জি।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলায় আরও একটা পরিবর্তন দেখতে চাই। এবার দশ বছর আগে হওয়া সেই পরিবর্তনের পরিবর্তন করার হাওয়া উঠেছে।’

দিলীপ ঘোষ তৃণমূল সরকার ও প্রশাসনের সমালোচনা করে বলেন, ‘এই দলটার অবস্থা আজ এমন হয়েছে যে, নিজেদের কোনও নেতার প্রতিই আর তাদের বিশ্বাস নেই। তাই পুলিশ দিয়ে নিজেদের নেতাদেরই আজ বাড়িতে আটকে রাখতে হচ্ছে! এর পরও যদি তৃণমূলের শীর্ষনেতারা নিজেদের ভবিষ্যৎ বুঝতে না পারেন, তা হলে কিছু বলার নেই।’ সভায় সকলের শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পেশ করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে তৃণমূলের সভা করার কথা ছিল। কিন্তু সেই সভা অজ্ঞাত কারণে তারা করেনি। এখন বলছে, ১৮ তারিখ তারা সভা করবে। আমি ঘোষণা করছি, তার পরের দিন, মানে ১৯ তারিখ আমি পাল্টা সভা করব খেজুরিতে। ১৮ তারিখ তাঁরা যে সব কথা বলবেন, সেইসব কথার প্রতিটির উত্তর আমি দেব ১৯ তারিখ।’ প্রসঙ্গত, ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামের সভায় উপস্থিত থাকার কথা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ১৮ তারিখের সভায়ও উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে তাঁর। শুক্রবারের সভায় উপস্থিত ছিলেন নন্দীগ্রামের শহিদ পরিবারের সদস্যরা।

জানা গিয়েছে, নন্দীগ্রামে শহিদ সদস্যদের ৪১টি পরিবারের মধ্যে ৩১টি পরিবারের সদস্যরা এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা সভা শুরুর আগে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, তাঁরা ‘দাদা’র সঙ্গেই রয়েছেন। নন্দীগ্রামে গণহত্যার পর ১৪ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। এই ১৪ বছর ধরে তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন শুভেন্দু অধিকারীই। তিনি সবসময়ই তাঁদের পাশে থেকেছেন। অসুস্থতার সময় চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। তাই ‘দাদা’র হাত ছেড়ে দেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। ‘দাদা’ যেদিকে যাবেন, তাঁরাও সেদিকেই যাবেন। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবারও নেতাইয়ে শুভেন্দুর সভায় শহিদ ১১ পরিবারের মধ্যে ৯ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আর তৃণমূলের সভায় ছিলেন মাত্র ২টি পরিবারের সদস্যরা।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..